শ্রাবণ অমাবস্যা – কি করবেন , কি করবেন না

You are currently viewing শ্রাবণ অমাবস্যা – কি করবেন , কি করবেন না

শ্রাবণ অমাবস্যা (Shravana Amavasya) হিন্দু ক্যালেন্ডারের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন, যেটি শ্রাবণ মাসে (জুলাই-আগস্ট) অমাবস্যার দিনে পড়ে। এটি আধ্যাত্মিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন এবং পূর্বপুরুষদের অর্ঘ করার জন্য একটি অত্যন্ত শুভ দিন হিসাবে বিবেচিত হয়।

এই দিনে, লোকেরা সাধারণত একটি পবিত্র নদী বা পবিত্র স্থানে স্নান করে এবং তর্পণ করে, যা পূর্বপুরুষদের জলের নৈবেদ্য। এটি তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি এবং সুখ নিয়ে আসে বলে বিশ্বাস করা হয়।

ভারতের কিছু অংশে, লোকেরা এই অমাবস্যায় উপবাসও পালন করে এবং ভগবান শিব এবং দেবী পার্বতীর পূজা করে। তারা বিশেষ প্রার্থনা করে এবং সমৃদ্ধি, সাফল্য এবং সুখের জন্য আশীর্বাদ চায়।

সামগ্রিকভাবে, শ্রাবণ অমাবস্যা হিন্দুদের জন্য গভীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্যের একটি দিন এবং সারা দেশে অত্যন্ত ভক্তি ও উৎসাহের সাথে পালিত হয়।

শ্রাবণ অমাবস্যার (Shravana Amavasya)গুরুত্ব

শ্রাবণ অমাবস্যাকে হিন্দুধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয় এবং হিন্দু মাসে শ্রাবণ মাসে অমাবস্যা পালিত হয়। এখানে কিছু কারণ রয়েছে কেন এটি তাৎপর্য রাখে:

পূর্বপুরুষের পূজা: শ্রাবণ অমাবস্যায়, এটি বিশ্বাস করা হয় যে পূর্বপুরুষদের আত্মারা তাদের বংশধরদের আশীর্বাদ করতে পৃথিবীতে আসেন। তাই, মানুষ এই দিনে তাদের পূর্বপুরুষদের পূজা করে এবং প্রার্থনা করে।

ধর্মীয় তাৎপর্য: এই অমাবস্যাকে ভগবান শিব এবং দেবী পার্বতীর জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে তাদের পূজা করলে আশীর্বাদ, সমৃদ্ধি এবং সৌভাগ্য পাওয়া যায়।

আধ্যাত্মিক তাৎপর্য: শ্রাবণ অমাবস্যাকে আত্মদর্শন, আত্ম-প্রতিফলন এবং আধ্যাত্মিক বৃদ্ধির দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। অনেক লোক আশীর্বাদ এবং জ্ঞানলাভের জন্য উপবাস পালন করে, ধ্যান করে এবং অন্যান্য আধ্যাত্মিক অনুশীলনে জড়িত থাকে।

উত্সব উদযাপন:এই অমাবস্যা ভারতের অনেক অঞ্চলে অত্যন্ত উত্সাহ এবং আনন্দের সাথে পালিত হয়। লোকেরা মেলার আয়োজন করে, লোকনৃত্য পরিবেশন করে এবং ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি ও সুস্বাদু খাবার উপভোগ করে।

শ্রাবণ অমাবস্যা হিন্দুধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন যা পূর্বপুরুষদের উপাসনা, ধর্মীয় বিশ্বাস, আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি এবং উত্সব উদযাপনের জন্য তাৎপর্য বহন করে।

শ্রাবণ অমাবস্যায় আচার ও পূজা

শ্রাবণ অমাবস্যাকে হিন্দুধর্মে আচার-অনুষ্ঠান ও উপাসনা করার জন্য একটি শুভ দিন বলে মনে করা হয়। এখানে এই দিনে অনুসরণ করা কিছু সাধারণ আচার এবং উপাসনা অনুশীলন রয়েছে:

তর্পণ: তর্পণ হল পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদ ও সুরক্ষার জন্য জল নিবেদনের একটি অনুষ্ঠান। শ্রাবণ অমাবস্যায়, লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই আচারটি পালন করে।

অভিষেকম: অভিষেকম হল একটি ঐতিহ্যবাহী উপাসনা অনুশীলন যেখানে ভক্তরা আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য দেবতার উপর পবিত্র জল বা অন্যান্য নৈবেদ্য ঢেলে দেন। অনেকে অমাবস্যায় ভগবান শিব ও দেবী পার্বতীর অভিষেক করেন।

উপবাস: শ্রাবণ অমাবস্যায় উপবাস একটি সাধারণ রীতি। কিছু লোক সম্পূর্ণ উপবাস পালন করে যখন অন্যরা সাধারণ খাবার খান বা শুধুমাত্র ফল এবং দুধ খান।

আরো পড়ুন – চৈত্র অমাবস্যায় কি করবেন কি করবেন না

পূজা: পূজা বা পূজা শ্রাবণ অমাবস্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ভক্তরা শিব, দেবী পার্বতী এবং অন্যান্য দেবতাদের ফুল, ফল এবং অন্যান্য নৈবেদ্য দিয়ে পূজা করে। আশীর্বাদ এবং সৌভাগ্য কামনা করার জন্য মন্দির এবং বাড়িতে বিশেষ পূজা করা হয়।

দান: অমাবস্যায় অন্ন, বস্ত্র বা অর্থ অভাবগ্রস্তদের দান করা একটি মহৎ কাজ বলে বিবেচিত হয়। অনেক মানুষ এই দিনে ঈশ্বরের কাছ থেকে আশীর্বাদ পেতে দান করেন।

শ্রাবণ অমাবস্যা (Shravana Amavasya) হল দেবতা এবং পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য আচার-অনুষ্ঠান এবং উপাসনা করার একটি দিন। তর্পণ, অভিষেক, উপবাস, পূজা এবং দান এই দিনে অনুসরণ করা কিছু সাধারণ রীতি।